ম্যাচের শুরুতেই জার্মানির সামনে এগিয়ে যাওয়ার মঞ্চ তৈরি হয়ে গেল। কিন্তু ভিএআরে বদলে গেল দৃশ্যপট। উল্টো পরক্ষণেই তারা খেয়ে বসল গোল। আক্রমণাত্মক ফুটবলে সে ধাক্কা কাটিয়ে কাতার বিশ্বকাপে ওঠার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল হান্স ফ্লিকের দল। হামবুর্কে শুক্রবার রাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ‘জে’ গ্রুপের ম্যাচে রোমানিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ইয়ানিস হাজির গোলে স্বাগতিকরা পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন সের্গে জিনাব্রি। শেষ দিকে গিয়ে ব্যবধান গড়ে দেন বদলি নামা টমাস মুলার। ম্যাচে প্রায় ৭৫ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ২২টি শট নেয় জার্মানি, যার ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। আর রোমানিয়ার ৯ শটের মাত্র একটিই ছিল লক্ষ্যে। হান্স ফ্লিকের কোচিংয়ে বাছাইয়ে চার ম্যাচ খেলে সবকটিতেই জিতল জার্মানি। আগের তিন ম্যাচে কোনো গোল হজম না করে প্রতিপক্ষের জালে ১২ বার বল পাঠানো জার্মানি ম্যাচের নবম মিনিটে পিছিয়ে পড়ে। দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে গোলটি করেন হাজি।

অবশ্য ভিএআরে সিদ্ধান্ত না বদলালে হয়তো উল্টোটাই হতো। ডি-বক্সে টিমো ভেরনার পেছন থেকে ডিফেন্ডার আন্দ্রেই বুর্কার চ্যালেঞ্জে পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। প্রতিবাদ জানায় সফরকারীরা। এরপর দীর্ঘক্ষণ ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি। এর পরের মিনিটেই চমৎকার গোলে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেন হাজি। সতীর্থের পাস ধরে ডিফেন্ডার টিলো কেরারকে এড়িয়ে ডি-বক্সে ঢোকার মুখে আরেক ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগারকে ফাঁকি দিয়ে কোনাকুনি শটে গোলটি করেন স্কটিশ ক্লাব রেঞ্জার্সের ফরোয়ার্ড। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে বল দখলে রেখে আক্রমণে মনোযোগী হয় জার্মানি। বারবার প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়াতে থাকে তারা। কিন্তু বিরতির আগে কাঙ্ক্ষিত জালের দেখা পায়নি তারা। দ্বিতীয়ার্ধেও একইরকম চাপ ধরে রেখে শুরু করা জার্মানি সমতায় ফেরে ৫২তম মিনিটে। ডি-বক্সের মুখ থেকে মার্কো রয়েসের ছোট কাটব্যাক পেয়ে নিচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন বায়ার্ন মিউনিখ মিডফিল্ডার জিনাব্রি। চার মিনিট পরই দলকে এগিয়ে নিতে পারতেন রয়েস। কিন্তু ইয়োনাস হফমানের কাটব্যাক পেয়ে ১০ গজ দূর থেকে ভলি উড়িয়ে মারেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ফরোয়ার্ড। কিছুক্ষণ পর দুই মিনিটের ব্যবধানে ভালো পজিশনে বল পেয়েও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ভেরনার। প্রবল চাপ ধরে রাখার ফল মেলে ৮১তম মিনিটে। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল হেডে লেয়ন গোরেটস্কা পাঠান পেছনে। দূরের পোস্টে থাকা মুলার অনায়াসে কাছ থেকে জয়সূচক গোলটি করেন। সাত ম্যাচে ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে জার্মানি। দিনের আরেক ম্যাচে লিখটেনস্টাইনকে ৪-০ গোলে হারানো নর্থ মেসিডোনিয়া ১২ পয়েন্ট নিয়ে উঠেছে দ্বিতীয় স্থানে।

আইসল্যান্ডের মাঠে ১-১ ড্র করা আর্মেনিয়াও সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিন নম্বরে। চার নম্বরে নেমে যাওয়ার রোমানিয়ার পয়েন্ট ১০।